Description
Narrative that depicts the wild adventures of extravagantly exaggerated folk heroes— এভাবেই ‘টল টেলস’-এর সংজ্ঞা দিয়েছে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে অক্লেশে নদী বা হ্রদ খুঁড়ে ফেলা দৈত্যাকৃতি লাম্বারজ্যাক পল বুনিয়ান, কাউবয় উইলিয়াম এফ কোডি, ঝড়ে পানামার ওপর দিয়ে ঠিকরে যাওয়ার সময় পানামা খাল খুঁড়ে ফেলা ক্যাপ্টেন স্টর্ম্যালং— এমনই নানা চরিত্র। এঁদের বাইরেও আছেন স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের ‘ব্রিগেডিয়ার জেরার্ড’, আর্নেস্ট ব্রামার ‘কাই লুং’, মাইক রেসনিকের ‘রেভারেন্ড লুসিফার জোনস’। কিন্তু এঁদের সবার পূর্বসূরি হিসেবে যাঁর নাম ইতিহাসে জ্বলজ্বল করছে, তিনি হলেন ব্যারন মিউনখহাউজেন বা মুনশাউজেন।
এই চরিত্রটি কাল্পনিক, কিন্তু এঁকে গড়া হয়েছিল সত্যিকারের ব্যারন, হায়রোনিমাস কার্ল ফ্রেডেরিখ ভন ফ্রিহার মিউনখহাউজেন-এর আদলে। রাশিয়া আর অটোমান তুরস্কের মধ্যে ১৭৩৫ থেকে ১৭৩৯ অবধি চলা যুদ্ধে এই ব্যারন রাশিয়ার হয়ে লড়েছিলেন। ১৭৬০ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ভদ্রলোক যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর নানা অবিশ্বাস্য কীর্তিকলাপ গল্পের মতো করে শোনাতেন লোকেদের। অভিজাত মহলে মনোরঞ্জক হিসেবে তাঁর বেশ নাম (“নাম কিউঁ, বদনাম বোলিয়ে”— সৌজন্যে মগনলাল মেঘরাজ) হয়। হয়তো এই দেখেশুনে খেপে গিয়েই রুডলফ এরিখ রাস্প তৈরি করেন ওই নামেরই এমন এক চরিত্র, যাঁর গুল্পের সামনে সত্যিকারের ব্যারনও ফেল মেরে যাবেন। সেগুলো লেখকের নাম ছাড়াই প্রথমে জার্মান পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৭৮৫ সালে ওগুলো ইংরেজিতে অক্সফোর্ড থেকে বই আকারে সংকলিত হয়। দারুণ জনপ্রিয় হওয়ার ফলে নানা ইউরোপীয় ভাষার পাশাপাশি জার্মানেও অনূদিত হয় বইটা। তখন সত্যিকারের ব্যারন জানতে পারেন, কী হইতে কী হইয়া গিয়াছে! বেজায় রেগে তিনি লেখক ও প্রকাশকদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। ঝামেলা এড়াতে এই গল্পগুলোর স্রষ্টা নিজেকে এদের লেখক বলে দাবিই করেননি! রাস্পের নাম সর্বসমক্ষে আসে তাঁর মৃত্যুর পর।
বিশ্বসাহিত্যে এই গল্পগুলোর প্রভাব যে কতটা ব্যাপক, তা বলে বোঝানো মুশকিল। এখন মূল বইটা হয়তো কমই পড়া হয়, কিন্তু মিউনখহাউজেন-এর সন্ততিরা প্রায় সব ভাষার সাহিত্যে দাপটে বিরাজমান। শুধু সাহিত্যে নয়, বিদ্যাচর্চার জগতেও এই নামটি অমর হয়ে আছে মিউনখহাউজেন সিনড্রোম (ভয়ঙ্কর কোনো অসুখ বাস্তবে না হলেও তা হয়েছে এমন দাবি করার মনোরোগ), মিউনখহাউজেন ট্রাইলেমা (অসম্ভব যুক্তি দিয়ে অবাস্তবকে প্রমাণ করার চেষ্টা), মিউনখহাউজেন নাম্বার ইত্যাদিতে।
এই অমর চরিত্র তথা ঘরানার উদ্দেশে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন লেখক তাঁর নিজস্ব ভঙ্গির অনুবাদে। সেটি ভালোভাবে উপভোগ করতে চাইলে আগে মোবাইলটাকে দূরে সরিয়ে রাখুন, যাতে গুগল করে “এরকম আবার হয় নাকি?” জানতে চাওয়ার ইচ্ছেটা কিছুক্ষণের জন্য স্থগিত রাখা যায়। তারপর বেশ আরাম করে বসুন। ভাবুন, উলটোদিকে একটা সোফা বা গদিওলা চেয়ারে বসে আছেন ব্যারন নিজে। এবার তিনি মুখ খুলতে চলেছেন। তিন… দুই… এক…!
Reviews
There are no reviews yet.